ভালো রান্না করতে পারেন এমন অনেকেই রান্নার মাধ্যমেই টাকা উপার্জন করতে চান। যদি ট্রেনিং নিয়ে থাকেন অথবা রান্নায় আগ্রহ থেকে থাকে, আপনি আপনার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।
নিজের রান্নার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে উপার্জন করতে এই আইডিয়াগুলি দেখে নিতে পারেন।
১. হোম রেস্টুরেন্ট ও অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস
ক্লাউড কিচেনকে অনেকেই ভার্চুয়াল কিচেন বা স্যাটেলাইট কিচেনও বলে থাকেন। তবে এর প্রাথমিক লক্ষ্য একটাই, পরিচালনার খরচ বাঁচাতে কাস্টমারদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেয়া।
নিজের ক্লাউড কিচেন চালু করতে দ্বিধা হলেও ভয় পাবেন না। খাবারের অনলাইন ডেলিভারি দেয় এমন অনেক কোম্পানি আছে এখন। যারা খাবারের তালিকা করে, প্রচার করে ও বিজনেসের মার্কেটিং ও সেলসের বিষয়টি সামাল দিয়ে কাস্টমারের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়। আপনি বরং মেন্যুতে কী কী রাখবেন সেই সিদ্ধান্ত নিন আর বাকিটা তাদের হাতে ছেড়ে দিন।
মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে অর্ডার নেয়া হবে, আপনি অর্ডারটি রান্না করবেন ও তারা নিজস্ব কর্মীদের দিয়ে সেই খাবার কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দেবে। সপ্তাহ কিংবা মাস শেষে ডেলিভারি কোম্পানি নিজেরা কিছু কমিশন রেখে সরাসরি আপনাকে টাকা দেবে।
তাছাড়া আপনার ফেসবুক পেইজ থেকেও কাস্টমাররা সরাসরি অর্ডার দিতে পারবে। ডেলিভারি থেকে শুরু করে সবটা আপনাকেই দেখতে হবে, তাহলে সেবা ব্যবহারের জন্য কাউকে অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ দিতে হবে না।
২. অনলাইনে রান্না শেখানো
অনলাইনে রান্না শেখানো বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। নিজের রান্নার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করা এখন খুব বেশি কঠিন না। নতুন ও উদ্ভাবনামূলক ক্লাস বানিয়ে অন্যদের আপনার রেসিপি ও রান্নার পদ্ধতি শেখাতে পারেন।
কাজটি প্রথমে ইউটিউবে ও পরে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে কিংবা নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানেও করতে পারেন। এর জন্য একটি ভালো মানের ক্যামেরা বা মোবাইল ও মাইক্রোফোন দরকার হবে যাতে যে খাবারগুলি বানাতে শেখাচ্ছেন তা ভালোভাবে রেকর্ড করা যায়।
৩. রেসিপি লেখা
এই সেকশনের সাথে আগের সেকশনের অনেক মিল আছে, তবে অডিওসহ ভিডিও না বানিয়ে বিভিন্ন ফুড ব্লগের জন্য রেসিপি বানাতে পারেন। লিখুন ও বিক্রি করুন। এ কাজের জন্য ভালোভাবে নেটওয়ার্ক করে আপনার রান্নার সাথে সম্পর্কিত ব্লগার কিংবা ওয়েবসাইট খুঁজে বের করুন। তারপর তাদের প্ল্যাটফর্মে আপনার নতুন ও সৃজনশীল রেসিপি উপস্থাপন করার সুযোগ চান।
এতে আপনার কম রান্না করতে হবে, তবে প্রতিটি রেসিপি বানানোর উপায় সহজ ও বিস্তারিত বর্ণনা লিখতে হবে।
৪. ফুড ব্লগিং
যথেষ্ট রেসিপি থাকলে ও কম্পিউটারের কাজ জানলে আপনি নিজের ব্লগ বানাতে পারেন। রান্নার বিষয়ে আগ্রহ আছে এমন মানুষের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার দারুণ উপায় এটি।
তবে ব্লগ পরিচালনা করতে এর পেছনে প্রচুর সময় দেয়া লাগে। এর ফলাফল দেখতেও সময় লাগে, তবে অধ্যবসায়ের সাথে কাজ চালিয়ে যান ও ধীরে ধীরে আপনার রান্নার অভিজ্ঞতা ও রেসিপির পরিমাণ বাড়বে, ফলে ব্লগ জনপ্রিয়তা পাবে ও বড় অডিয়েন্সকে আকৃষ্ট করবে।
যথেষ্ট পাঠকের মাঝে পৌঁছে গেলে, অন্য কোনো কোম্পানির মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন প্রচার ও আপনার রান্নার কোর্স বিক্রির মাধ্যমে টাকা আয় করার দারুণ সুযোগ আছে। নিজের রান্নার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে টাকা আয় করতে চাইলে প্রথমেই ব্লগ বানানোর কথা ভাবতে পারেন।
ব্লগ কীভাবে শুরু করবেন ও পাঠকদের আকৃষ্ট করবেন সে বিষয়ে অনলাইনে প্রচুর লেখা, ভিডিও ও টিউটোরিয়াল পাবেন। সেগুলি দেখে নিলে আপনার জন্য কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
৫. ইউটিউবে রান্নার চ্যানেল খোলা
নিজের রান্নার কোর্স বিক্রি কিংবা ব্লগ বা ক্লাউড কিচেনের রেসিপির প্রচারের জন্য ইউটিউব অসাধারণ একটি মাধ্যম। নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার বা সাবস্ক্রাইবার ও কন্টেন্টের ভিউ থাকলে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকেও আপনি টাকা পাবেন৷ তাই ওপরের আইডিয়াগুলির সাথে এটিও করতে পারেন।
ইউটিউব ও ফেসবুক কন্টেন্ট প্রকাশের জন্য বেশ কার্যকর দুটি মাধ্যম। রান্নায় পারদর্শী হলে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলুন ও ভিডিও বানানো শুরু করুন। যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস থাকলে লাইভস্ট্রিম করতে পারেন, এতে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সাথে সাথে দিতে পারবেন।
ইউটিউবের একটি সফল রান্নার চ্যানেল থেকে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা যায়। এমন কন্টেন্ট বানান যা দর্শকদের ভালো লাগবে। যেমন, সহজ রেসিপির ছোট ভিডিও, কম বাজেটের মধ্যে রান্নার টিপস, স্বাস্থ্যকর খাবার বানানো ও পার্টি বা ইভেন্টের জন্য কীভাবে খাবার বানাতে হবে ইত্যাদি।